সভ্যতার বিবর্তনের ফলে গ্রাম বাংলার একমাত্র বাহন ঘোড়ার গাড়ি হারিয়ে গেলেও চরাঞ্চলে ঘোড়ার গাড়ি এখন একমাত্র শেষ ভরসা। সরোজমিনে ফুলছড়ি উপজেলায় চরাঞ্চলে গেলে দেখা যায় একমাত্র ঘোড়ায় টানা এসব গাড়িতে চলাচলের বাহন হিসেবে বেছে নিতে বাধ্য হয়েছে চরে বসবাসরত মানুষ।
গাইবান্ধা জেলার ফুলছড়ি উপজেলার ব্রহ্মপুত্র, তিস্তা, যমুনা নদীর পানি শুকিয়ে বিস্তীর্ণ মরুভূমির ন্যায় ১৬৫টি চর ও দ্বীপচর জেগে উঠেছে, এসব চরে প্রয়োজনীয় পণ্য সামগ্রী বহনের জন্য একমাত্র সম্বল হচ্ছে ঘোড়ার গাড়ি।
নভেম্বর থেকে মে পর্যন্ত শুকনো মৌসুমে চরাঞ্চলের মানুষের কষ্টের ফসল ভুট্টা, বাদাম, মরিচ, পেঁয়াজ, ডাল, ধানের খড়, বহনের জন্য একমাত্র ভরসা হচ্ছে ঘোড়ার গাড়ি, এসব গাড়ির চাহিদাও অনেকাংশে বেড়ে যায় এ সময়। পাশাপাশি শুকনো মৌসুমে বালুচরে সৌন্দর্য উপভোগ করতে আসা অনেক পর্যটক আনন্দ উপভোগের জন্য ওঠেন এসব গাড়িতে।
উত্তর উড়িয়া গ্রামের মো. কোরবান আলী জানালেন শুকনো মৌসুমে ঘোড়ার গাড়ি চালিয়ে চলে তার সংসার। দিনে ৫০০ থেকে ৭০০ টাকা আয় করেন তিনি। এর মধ্য থেকেই দুই থেকে আড়াইশ টাকা খরচ করতে হয় ঘোড়ার খাবারের জন্য এভাবেই চলে তাদের সংসার।
বালাসীঘাটের ঘোড়ার গাড়ি চালক মো. মইনুল জানালেন এক বছর আগে এখানে ১৪ থেকে ১৫টি গাড়ি থাকলেও এখন পঞ্চাশটার বেশি গাড়ি রয়েছে। তিনি জানান, বালাসীঘাট ভ্রমণপিপাসু মানুষের চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় দিনদিন বেড়েছে ঘোড়ার গাড়ির সংখ্যা।
সেইসাথে বেড়েছে ঘোড়ার দাম এবং ঘোড়ার গাড়ির তৈরির যন্ত্রাংশের দাম। বর্ষা মৌসুমে এসব গাড়ির কোন মূল্য না থাকলেও শুকনো মৌসুমে চরাঞ্চলে চলাচলের জন্য একমাত্র ভরসাই হল ঘোরার গাড়ি।
চরাঞ্চলে বসবাসরত মানুষ এসব ঘোড়ার গাড়ি ব্যবহার করে উৎপাদিত ফসল শহরে বিক্রির জন্য নদীর মাঝ দিয়ে শুকনো নিয়ে আসতে হয় নদীর কিনারায়। একমাত্র বাহন হিসেবে ঘোড়ার গাড়িকেই বেছে নিতে বাধ্য হয়েছে চরের মানুষ।
টিএইচ